করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গে বিপর্যস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। করোনা ভাইরাসের শৃঙ্খল ভাঙতে রাজ্যে রাজ্যে জারি হওয়া লকডাউন, বন্ধ কলকারখানা, ব্যবসায় মন্দা প্রভাব ফেলেছে দেশের অর্থ ব্যবস্থার উপর। এই আবহে দেশের পাইকারি মুদ্রাস্ফীতি (Wholesale Inflation)ভাঙলো পূর্বের সমস্ত রেকর্ড। পৌছালো সর্বোচ্চ স্তরে। মে মাসে পাইকারি বাজারে মুদ্রাস্ফীতির হার পৌছালো ১২.৯৪ শতাংশে। এর আগে এপ্রিল মাসে দেশের পাইকারি মুদ্রাস্ফীতি ছিল ১০.৪৯ শতাংশ। তারও আগে মার্চে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৭.৩৯ শতাংশ। যা দেশের জন্য চিন্তার বিষয়।
গত কয়েকমাস ধরে পেট্রোল ডিজেলের দাম (Petrol- Diesel Price) বেড়েছে হুহু করে। টানা ২৩ বার উর্ধমুখী হয়েছে জ্বালানির দাম। যার কারণে দেশের বহু জায়গায়া পেট্রোলের দাম ১০০-র গণ্ডি ছাড়িয়েছে। এমনকি রাজস্থানে ডিজেলর দাম পার করেছে ১০০-র গণ্ডি। অন্যান্য রাজ্যগুলোতে ডিজেলের দাম ১০০ ছুঁইছুঁই। যে কারণে মার্চের তুলনায় মে মাসে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে প্রায় ৫.৫ শতাংশ। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে খুচরো বাজারে। আর তার জেরে মাথায় হাত আমজনতার। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম। তাছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার তেলের উপর ধার্য শুল্ক কমাচ্ছে না। ফলে ভারতে উত্তরোত্তর দাম বেড়েছে পেট্রোল, ডিজেলের। পেট্রোল-ডিজেলের দামের উপরেই যে কোনও পণ্যের পরিবহণের খরচ নির্ভর করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বেশিরভাগ পণ্যের।
ভারতের মুদ্রানীতি নির্ধারকদের ‘মুদ্রাস্ফীতির হারের লক্ষমাত্রা 4 শতাংশ কেবল কাগজেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এশিয়ার তৃতীয় অর্থনীতিকে করোনার মারণ কামড় থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও মুদ্রাস্ফীতি ভারতের অর্থনীতিতে জাঁকিয়ে বসেছে। ডেপুটি গভর্নর মাইকেল প্যাট্রা ৪ জুন এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছিলেন, বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি সরবরাহ দ্বারা চালিত হচ্ছে। চাহিদা বাড়লে ধীরে ধীরে সামঞ্জস্য আসবে। উল্লেখ্য, সময়ের ব্যবধানে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে দামস্তরের ওঠানামা হয়ে থাকে। যখন দামস্তর ক্রমাগত ওঠানামা বৃদ্ধি পায় তখন দেশে মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি হয়। মুদ্রাস্ফীতি হলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থে আপনি আগের তুলনায় বর্তমানে অনেক কম জিনিস ক্রয় করতে পারেন।মুদ্রাস্ফীতি বেশি বৃদ্ধি পেলে ধনী গরীবের বৈষম্য বেড়ে যায়। সঞ্চয়ের পরিমান কম হওয়ায় বিনিয়োগ কম হয়। বিনিয়োগ কম হলে দেশের দেশের অর্থনৈতিক অবস্থায় মন্দা দেখা যায়।
0 Comments