বিশ্বরূপ দে : বিরোধী দলের প্রকাশ্য রাজনৈতিক কর্মসূচী বন্ধ করতে রাজ্য সরকার দ্বারা বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের অপব্যবহারের প্রতিবাদে আগামী দিনে রাজ্য জুড়ে আইন অমান্য আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিল নকশালপন্থী সংগঠন সিপিআই (এমএল) লিবারেশন । ১লা আগস্ট দলের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কমরেড অতনু চক্রবর্তী এক প্রেস বিবৃতি জারি করে বলেন, " স্ট্যান স্বামীর হেফাজত হত্যার পর দেশজুড়ে ইউএপিএ এবং রাষ্ট্রদ্রোহ আইন সহ সমস্ত দমনমূলক আইন রদ করার যে দাবি উঠেছে, সেই দাবির সমর্থনে দলের পক্ষ থেকে করোনা পরিস্থিতির কথা ভেবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সীমিত মানুষের সমাবেশের মধ্যে দিয়ে একাধিক কর্মসূচী গ্রহণ করে । কিন্তু উল্লিখিত আইনগুলির দোহাই দিয়ে ২৮শে জুলাই যাদবপুরের পালবাজারে ও ৩রা আগস্ট হাজরা মোড়ে পার্টি কর্মসূচীর কোন অনুমতি দিল না রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন । অথচ, বিভিন্ন ইস্যুতে রাস্তায় মঞ্চ বেঁধে একের পর এক রাজনৈতিক কর্মসূচী গ্রহণ করছে রাজ্যের শাসকদল । আগস্ট মাসকে আন্দোলনের মাস হিসেবে ধরা হয় । ৫ই আগস্ট নকশাল আন্দোলনের অন্যতম নেতা কমরেড সরোজ দত্তের শহীদ দিবস । ৯ই আগস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক দিনে "ভারত বাঁচাও" স্লোগানকে সামনে রেখে কেন্দ্রের মোদি সরকার কর্তৃক দেশবিক্রি নীতির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে প্রত্যেকটি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন । ১১-১৩ই আগস্ট সিদ্ধার্থ শংকর রায় জমানায় অনুষ্ঠিত "বরাহনগর-কাশিপুর গণহত্যা"র ৫০ বছর পূর্তি । অথচ সেই গণহত্যার বিরুদ্ধে অসংখ্য প্রতিবাদী কর্মসূচী আজ রীতিমতো প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে । পাশাপাশি, ১৫ই আগস্টকে সামনে রেখে, ভারতীয় সংবিধানকে জলাঞ্জলি দিয়ে মোদি সরকারের হিন্দুরাষ্ট্র গঠনের যে মহড়া চলছে, তার বিরুদ্ধেও একাধিক রাজনৈতিক কর্মসূচী গ্রহণের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে । কয়েকমাস আগেই বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যবাসীর বিপুল সমর্থনে তৃতীয়বারের মতো পশ্চিমবঙ্গের মসনদে বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় । কিন্তু অতীতের মতো আজও বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার প্রবণতা প্রকটভাবে প্রতীয়মান তাঁর আচরণে । পক্ষপাতপুষ্ট প্রশাসন কোন ক্ষেত্রেই তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখছে না । আমরা এই ধরনের রাজনৈতিক আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই" । এপ্রসঙ্গে প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয় যে কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগস্ট মাস ব্যাপী দলের পক্ষ থেকে যে একাধিক প্রকাশ্য রাজনৈতিক কর্মসূচীগুলি পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা পালন করতে সরকার যেন ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার বিবেচনা করে । অন্যথায় রাজ্য সরকারের এই স্বৈরাচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে সমগ্র রাজ্য জুড়ে আইন অমান্য কর্মসূচীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের কলকাতা জেলা সম্পাদক কমরেড অতনু চক্রবর্তী ।
0 Comments