দিল্লীর দূষণে পাকিস্তানকে দায়ী করলো যোগী সরকার
বিশ্বরূপ দে : দিল্লীর মাত্রাতিরিক্ত দূষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে এক আজব যুক্তি দিলো উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার । পাকিস্তানের দূষিত হাওয়া নাকি দূষিত করেছে দিল্লীর মলয় বাতাস - সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই দাবি যোগীরাজের । যোগীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উত্তরপ্রদেশের কারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়ার সাথে দিল্লী দূষণের কোন সম্পর্কই নেই । যোগীর এই আজব যুক্তি শোনার পরই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি মাননীয় এন.ভি.রামানা রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন,"আমরা কি তাহলে পাকিস্তানকে তাদের ইন্ডাস্ট্রি ব্যান করার কথা বলবো !" যদিও উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয় যে দিল্লীর বায়ু দূষণের সাথে উত্তরপ্রদেশের কারখানার কোন যোগাযোগই নেই ।
সম্প্রতি দিল্লীর মাত্রাতিরিক্ত দূষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় রাজ্য এবং কেন্দ্রকে । এরপরই রাতারাতি স্কুল বন্ধ করার কথা ঘোষণা করে দিল্লীর আপ সরকার । সেইমতো শুক্রবার থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করে দিল্লীর পরিবেশ মন্ত্রক । এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরেই সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দেয় যে দিল্লী সরকারকে স্কুল বন্ধ রাখার কথা আদালত বলে নি ।
বৃহস্পতিবারই দিল্লীর দূষণ নিয়ে রাজ্য সরকারকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন,"কাজের কাজ তো কিছুই হচ্ছে না, শুধুই সময় বরবাদ হচ্ছে এবং মাঝখান থেকে দূষণের মাত্রা আরো বাড়ছে"।
গতকাল সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে একদিনের সময় দিয়েছিল, দিল্লীর দূষণ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে বা নেওয়া হবে তা বিস্তারিতভাবে আদালতে জানানোর জন্য । এদিনই দিল্লী সরকারকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বলেন,"তিন-চার বছরের বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে, আর প্রাপ্ত বয়স্করা ঘরে থেকে কাজ করছেন ! আমার মনে হচ্ছে সরকার পরিচালনার কাজে আদালত একজন প্রশাসক নিয়োগ করলেই ভালো হবে"। এর বিরুদ্ধে সরকার পক্ষের আইনজীবী মনু সিংভি বলেন,"অতিমারী পরিস্থিতিতে পড়াশোনা নষ্ট হয়েছে বলে এর আগে বহু বিতর্ক হয়েছে । তাই স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে । তবে সরকার অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থাও চালু রেখেছে । তাই সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে স্কুলে আসতে হয় নি"। এই যুক্তির পাল্টা জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন,"অফলাইন ক্লাসের সুযোগ থাকলে কেই বা বাড়িতে বসে থাকবে ? আমাদের বাড়িতেও সন্তান আছে, আমরা দেখেছি অতিমারির পরিস্থিতিতে বাড়িতে বসে থেকে তারা কতটা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল । ছাত্রছাত্রীরা কেউই বাড়িতে বসে থাকতে রাজি নয় । ২৪ ঘন্টার মধ্যে সরকার পদক্ষেপ না নিলে আদালত আগামীকাল এবিষয়ে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করবে"। এরপরই স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লীর কেজরিওয়াল সরকার ।
0 Comments