আহতদের বাঁচাতে রক্তদানের সিদ্ধান্ত নিলো রেড ভলান্টিয়ার্স
বিশ্বরূপ দে : গতকাল উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি, আহতদের বাঁচাতে রক্তদান কর্মসূচির উদ্যোগ নিলো বামেরা ।
বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ও দোমহনী জংশনের ওভারব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় বিকট শব্দে হঠাৎই লাইনচ্যুত হয়ে যায় পাটনা-গৌহাটিগামী আপ বিকানির এক্সপ্রেসের ১২টি বগি । তার মধ্যে একটি বগি পার্শ্ববর্তী জলাশয়ে গিয়ে পড়ে । এই ঘটনায় আহত-নিহতের সংখ্যা সরকারি হিসেবে এখনো পর্যন্ত সঠিক ভাবে জানানো সম্ভব না হলেও, মৃতের পাশাপাশি, আহতদের সংখ্যা আনুমানিক হাজারের বেশি বলেই জানা যাচ্ছে । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌছন মন্ত্রী গৌতম দেব ও প্রশাসনিক কর্তারা । যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু করা হয় উদ্ধারকাজ । প্রশাসনের পাশাপাশি এই উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে বামপন্থী ছাত্রযুবদের "রেড-ভলান্টিয়ার্স" টিমের সৈনিকরা ।
দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ওইদিনই প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা, আহতদের এক লক্ষ টাকা ও অপেক্ষাকৃত কম আহতদের পঁচিশ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে ওইদিন রাতেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । কিন্তু তাদের অবস্থা এতটাই আশঙ্কাজনক ছিল যে তৎক্ষণাৎ বিপুল পরিমান রক্তের চাহিদা তৈরি হয় । কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে বিগত দুবছর ধরে রক্তদান কর্মসূচি খুব একটা হয়নি । ফলে বিভিন্ন ব্লাডব্যাংকগুলিতে রক্তের যোগান অল্প । রক্তের এই চরম সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে ট্রেন দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ব্যক্তিদের প্রাণ বাঁচাতে কোভিড বিধির পরোয়া না করেই দুর্ঘটনার সাথে সাথেই রক্তদানের মাধ্যমে আহতদের জীবনদান করতে সাহসী ও প্রসংশনীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে বামপন্থী ছাত্রযুবদের "রেড ভলান্টিয়ার্স" টিম । জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতালে পৌঁছে আহতদের বাঁচাতে রক্তদান করেন বাম ছাত্রযুবরা ।
নকশালপন্থী সংগঠন সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের পক্ষ থেকেও রেল দুর্ঘটনায় আহতদের বাঁচাতে রক্তদানের আহ্বান জানানো হয় ।
এই দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি, আহতদের দ্রুত আরোগ্যলাভ এবং দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের দাবি তুলেছেন ভাঙরের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী ।
0 Comments