তৃণমূলী সন্ত্রাসকে উপেক্ষা করে ভোট শতাংশের নিরীখে দ্বিতীয় স্থানে বামেরা
বিশ্বরূপ দে : জনতার রায়ে ১৯৮টি আসনে জয়লাভ করে আসানসোল, চন্দননগর, বিধাননগর ও শিলিগুড়ি পৌরসভা দখল করলো তৃনমূল কংগ্রেস । এই চার জেলার মোট ২২৬টি আসনের মধ্যে ১৯৮টি আসনেই বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছে শাসকদল । দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি । কিন্তু শতাংশের হিসেবে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে বামেরা । এক্ষেত্রে বিধাননগরে ১০.৬৬%, চন্দননগরে ২৭% ভোট এবং আসানসোল ও শিলিগুড়িতে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিজেপিকে ভালই চাপে রাখতে সক্ষম হয়েছে বামেরা ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ, তৃণমূলী সন্ত্রাস উপেক্ষা করেই একমাত্র বিধাননগর বাদে বাকি তিনটি পৌরসভাতেই বেশ কিছু আসন দখল করতে সক্ষম হয়েছে বামেরা ।
নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য কমরেড সুজন চক্রবর্তী এক বিবৃতিতে বলেন,"সার্বিক ফলাফলের নিরীখে রাজ্যের শাসকদল তৃনমূলই জিতেছে, কারণ অন্য কোন দলের জেতার কোন সুযোগই ছিল না"। নির্বাচনের দিন চার জেলায় সকাল থেকেই শাসকদল আশ্রিত গুন্ডাবাহিনী যেভাবে বোমা, বিরোধী প্রার্থীদের মারধোর ইত্যাদির মাধ্যমে সন্ত্রাস নামিয়ে কমিশন ও পুলিশের নাকের ডগায় ভোট লুঠ করেছে, তাতে এই ফলাফল যে কোন আশ্চর্য্যের বিষয় বা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত রায় - তা মানতে নারাজ সুজন চক্রবর্তী । কিন্তু এত সবকিছু করেও বামেদের রোখা যায়নি বলেই দাবি তাঁর । এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন,"বহু মহলের ধারণা ছিল, তৃণমূলের একমাত্র বিকল্প বিজেপি । কিন্তু ফলাফলে প্রমাণিত হলো যে তৃণমূলের বিকল্প হতে পারে একমাত্র বামেরাই । গত বিধানসভায় বিজেপির ভোট ছিল ৪০%, এই চার পৌরসভায় তা নেমে হয়েছে ১৫%। আর বামেদের ক্ষেত্রে যা ছিল ৮ থেকে ৯%, তা এবার বেড়ে হয়েছে ১৮% । সুতরাং এটা পরিষ্কার যে বাংলা থেকে তৃণমূলকে সরানোর ক্ষমতা রাখে একমাত্র বামেরা"।
যদিও চার পৌরসভার ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর, একসময়ের বামদুর্গ শিলিগুড়িতে দলের প্রতি মানুষের আস্থা হারানোকেই পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন শিলিগুড়ি পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র কমরেড অশোক ভট্টাচার্য । তিনি বলেন,"বামপন্থীদের একটা বড় অংশের ভোট সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই বিজেপিতে চলে যায় । লাগাতার প্রেচেষ্টার পর তাদের বাম পতাকাতলে একত্রিত করা সম্ভব হয়েছিল । সেদিক থেকে আশা করা গেছিল যে বামপন্থী মানুষের ওই ভোটব্যাংক পুনরায় উদ্ধার করতে সক্ষম হবে দল । কিন্তু ফলাফলে পরিষ্কার বোঝা গেল যে শিলিগুড়ির মানুষ রাজনৈতিক ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে আমাদের । আর তাই শিলিগুড়ি সহ অন্যান্য তিন পৌরসভাতেও পরাজয় হয়েছে বামেদের । এই পরাজয়কে অবশ্যই মান্যতা দিতে হবে । তবে এই পরাজয় ধরে ঘরে বসে থাকলে হবে না, পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীদিনে গণ-আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে হবে । এটাই বামপন্থা"।
0 Comments