রাশিয়ার কিয়েভে আটকে পরা বাংলার ছাত্ররা কেন্দ্র ও রাজ্যকে তাদের উদ্ধারের আর্জি জানালো
বিশ্বরূপ দ : সম্প্রতি রাশিয়া বনাম ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে চরম উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিশ্বের আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলে । ইউক্রেনের জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে রাশিয়ার মুহুর্মুহ ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমনে এখনো পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা প্রায় তিনশো । ইতিমধ্যেই পূর্ব ইউক্রেন দখল করেছে রাশিয়া । ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনমতেই রাশিয়ার কাছে আত্মসমর্পন করবে না ইউক্রেন । অন্যদিকে ইউরোপীয় দেশগুলি শান্তি আন্দোলনের মাধ্যমে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করে শান্তিপ্রস্তাবের আহ্বান জানিয়েছে ।
এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ইউক্রেনের কিয়েভে সামরিক বাহিনীর বাংকারে আশ্রয় নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু নাগরিক । সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টের মাধ্যমে তারা জানিয়েছে যে চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়াশুনার জন্য তারা কিয়েভে যান এবং এই মুহূর্তে রাশিয়া যেভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে তা থেকে রক্ষা করতে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ওই ছাত্রদের কিয়েভের একটি বাংকারে নিয়ে এসেছেন । মাইনাস ডিগ্রি তাপমাত্রায় বুধবার রাত্রি থেকে অনাহার এবং আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে বাংলা থেকে পড়াশুনা করতে যাওয়া ওই সকল ছাত্ররা । সোশ্যাল মিডিয়ায় মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্যকে আবেদন জানিয়ে অবিলম্বে তাদের উদ্ধারের কথা জানিয়েছে ছাত্ররা ।
রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে যুদ্ধ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে সিপিআই (এমএল) লিবারেশন । উক্ত বিবৃতিতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, "রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে সামরিক আগ্ৰাসন জাহির করায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন । বর্তমান সংকটের নিরসন আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবেই করতে হবে, এবং ইউক্রেনের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের ভিত্তিতেই তা হতে হবে । এই সংকটের আশু প্রশমনে রাশিয়াকে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা বাহিনী প্রত্যাহার করে নিতে হবে । রাশিয়া এবং তার সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোকেও ইউক্রেনে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে । রাশিয়া এবং ইউক্রেন যে দুটো মিনস্ক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে তার ভিত্তিতেই তাদের কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছতে হবে । ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্ৰেট ব্রিটেন সরকার যুদ্ধে যে প্ররোচনা দিয়ে চলেছে আমরা তাকে ধিক্কার জানাচ্ছি । ন্যাটোকে তার পূবমুখী সম্প্রসারণ থামাতে হবে । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্ৰেট ব্রিটেন যে ন্যাটোকে আত্মরক্ষামূলক জোট বলে দাবি করছে, তার বিপরীতে বিগত এক প্রজন্মকাল ধরে আফগানিস্তান, যুগোস্লাভিয়া এবং লিবিয়ায় তাদের কীর্তিকলাপ সুস্পষ্ট রূপেই তাদের সাম্রাজ্যবাদী অভীপ্সাকেই প্রতীয়মান করে, ইরাকের ওপর মার্কিন-ব্রিটিশ হানাদারির কথা না হয় না বলাই হল । রাশিয়া সহ সারা ইউরোপের যুদ্ধ-বিরোধী আন্দোলনগুলোর প্রতি আমরা সংহতি জানাচ্ছি, এবং ইউরোপে নতুন করে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে পৌঁছানোর ও পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের দিকে এগিয়ে যাবার যে উদ্যোগগুলো গোটা মহাদেশে চলছে আমরা সেগুলোকে স্বাগত জানাচ্ছি"।
0 Comments