ব্রেকিং নিউজ

6/recent/ticker-posts

রামপুরহাট কান্ডে সিবিআইয়ের ওপর ভরসা নেই লিবারেশনের

 রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ মহঃ সেলিমের



বিশ্বরূপ দে  :    রামপুরহাট গণহত্যা কান্ডের তদন্তভার সিবিআইকে দিলো মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট । ২৫শে মার্চ, শুক্রবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষ থেকে উক্ত মামলার শুনানিতে বলা হয় যে ৭ই এপ্রিলের মধ্যে সিবিআইকে তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে হবে । পাশাপাশি, এখন থেকে এই তদন্তে কোনভাবেই রাজ্যের কোন তদন্তকারি সংস্থা অর্থাৎ "সিট"-এর ভূমিকা থাকবে না বলেই নির্দেশ মহামান্য আদালতের । বিশেষ প্রয়োজনে সিবিআই রাজ্য পুলিশের কাছে সহযোগিতা চাইতে পারে, এমনকি এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে, এমনকি সন্দেহভাজন যেকোন ব্যক্তিকেই তদন্তের স্বার্থে সিবিআই নিজেদের হেফাজতে নিতে পারবে বলে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ । 

  হাইকোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্যের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে আগাম ক্যাভিনেট দাখিল করা হয়েছে । যাতে এই ঘটনায় কোনভাবেই সিবিআই একতরফা রিপোর্ট পেশ করতে না পারে । 

  যদিও রামপুরহাট গণহত্যায় সিবিআই তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে বামেরা । সিবিআই তদন্তে আদৌ ন্যায় বিচার হবে কিনা, তাই নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে এদিনই এক বিবৃতি দিয়েছেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক কমরেড অভিজিৎ মজুমদার । উক্ত বিবৃতিতে তিনি বলেন,"সিবিআই তদন্তে ন্যায় বিচার কতটা সম্ভব তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে রাজ্যবাসীর । ঠিক যেরকম রাজ্যের "সিট" প্রসঙ্গেও বিন্দুমাত্র আস্থা নেই বঙ্গবাসীর"। প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে এবং বিচারবিভাগের ওপর মানুষের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে বিচার বিভাগের প্ৰত্যক্ষ তত্বাবধানে তদন্ত ও বিচারের দাবি তুলেছে লিবারেশন । 

  এপ্রসঙ্গে কমরেড অভিজিৎ মজুমদার বলেন যে তৃতীয়বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতা দখলের পর থেকে যেভাবে গণতন্ত্রের ওপর শাসকদলের হামলা নেমে এসেছে, তারই ধারাবাহিকতায় সংঘটিত হয়েছে রামপুরহাট গণহত্যা । অতীতেও ছোট আঙ্গারিয়া, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, নেতাই কান্ডে সিবিআই তদন্তের পরিণতি সকলেরই জানা আছে । একইভাবে সারদা-নারদা চিটফান্ড তদন্তেরও আজ পর্যন্ত কোন সুরাহা করতে পারেনি সিবিআই । তাই ন্যায় বিচার সুনিশ্চিত করতে রাজ্যজুড়ে তীব্র গণ-আন্দোলনই একমাত্র পথ বলে মন্তব্য করেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক কমরেড অভিজিৎ মজুমদার ।

  অন্যদিকে, রামপুরহাট গণহত্যা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক কমরেড মহঃ সেলিম বলেন যে কায়দা করে অভিযুক্তদের সারেন্ডার করানোর নাটক করে মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চিত করলেন যাতে আনিস খান হত্যাকাণ্ডে জড়িত আমতা থানার হোমগার্ডদের মতো ঘটনার মূল অভিযুক্ত আনারুল পুলিশের গাড়িতে ওঠার সময় বলতে না পারে, তাকে বলির পাঠা কর হচ্ছে । মুখ্যমন্ত্রীকে বিদ্রুপ করে তিনি আরো বলেন, বাংলায় ভাইপোদের লুঠের সাম্রাজ্যে জো হুজুরি করা পাঠাগুলোর সাবধান থাকা উচিত । কারণ বেদীমূলে তৃনমূলেশ্বরীর হাঁড়িকাঠ সর্বদা প্রস্তুত । আজ বাখরা, কাটমানি আর বেইমানির চটকদারি জীবনে যতই নাদুস নুদুস হোক না কেন, বিপদে পড়লে তৃনমূলেশ্বরী নিজেকে বাঁচাতে পাঠাদেরই বলি দেবেন । নৈরাজ্যের বাংলায় তিনিই অভিযোগকারিনী, তিনিই অভিযুক্ত, তিনিই নগরপাল আবার তিনিই কোতোয়াল । কখনো আবার তিনিই বিচারক, তিনিই ফাঁসুরে । রাজ্যের ভান্ডার উজাড় করে যিনি বিজ্ঞাপনদাতা, তিনিই বিজ্ঞাপিত ! অনারুলদের মতো চুনোপুঁটিদের গ্রেফতারে, লোকদেখানো পুলিশের ট্রান্সফার আর পয়সার বিনিময়ে রামপুরহাট গণহত্যা কিছুতেই ধামাচাপা দেওয়া যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন মহঃ সেলিম । 

  পাশাপাশি তিনি দাবি করেন,"অবিলম্বে ঘটনার ষড়যন্ত্রকারী রাঘববোয়ালদের গ্রেফতার করতে হবে, বাংলার প্রতিটি কোণে মজুত বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে এবং বাংলার গুন্ডা কনট্রোলকারী মুখ্যমন্ত্রীকেই এই ঘটনার দায় বহন করতে হবে"। তবে এদিন কলকাতা হাইকোর্টের শুনানিতে রামপুরহাট গণহত্যা প্রসঙ্গে সিবিআইকে তদন্তের ভার তুলে দেওয়া নিয়ে যথেষ্ট সংশয় প্রকাশ করেছেন বাম নেতৃত্ব ।

Post a Comment

0 Comments