ব্রেকিং নিউজ

6/recent/ticker-posts

দিল্লীর জাহাঙ্গীরপুরী পরিদর্শনে হান্নান মোল্লা

 ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে অবিলম্বে ক্ষতিপূরণের দাবি জানালো AISA



বিশ্বরূপ দে   :  বৈধ MCD certificate থাকা সত্বেও বিজেপি-আরএসএসের কূটনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন দিল্লীর জাহাঙ্গীরপুরীর মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ । বুলডোজার চালিয়ে এই নির্মম ও অবৈধ হামলা শুধুমাত্র জাহাঙ্গীরপুরীই নয়, সমগ্র ভারতবর্ষের মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য এক ভয়ঙ্কর হুমকি । বিজেপি ও আরএসএসের এই সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টিকারী ঘৃণ্য রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই সংগঠিত করার লক্ষ্যে ভারতবর্ষের গণতান্ত্রিক মহলের কাছে বিনীত আবেদন জানিয়েছে সিপিআই, সিপিআইএম, সিপিআই (এমএল) লিবারেশন সহ বিভিন্ন বামপন্থী দল । 

  সম্প্রতি দিল্লীর জাহাঙ্গীরপুরীতে বুলডোজার চালিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন কমরেড হান্নান মোল্লা সহ সিপিআইএমের একটি প্রতিনিধি দল । পাশাপাশি, সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের ছাত্র সংগঠন AISA-র পক্ষ থেকেও এলাকা পরিদর্শনে যান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রসেনজিৎ কুমার ও দিল্লীর সভাপতি কমরেড অভিজ্ঞান সহ অন্যান্যরা । 

  AISA-র প্রতিনিধি দল ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সাথে কথা বলেন, যাদের বিপনী ও দোকানঘর গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে । এদের অধিকাংশই মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত খেটে খাওয়া মানুষ । প্রতিনিধি দলের কাছে একজন পান বিক্রেতা তাঁর জবানবন্দিতে বলেছেন, যে তারা এখনো নিজেদের জিনিষপত্র সংগ্রহ করা এবং পুনরায় দোকানঘর সাজানোর অনুমতি পাচ্ছেন না । অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা বলেছেন, বুলডোজার দিয়ে ধ্বংসলীলা চালানোর আগে পরিকল্পনা মাফিক তাদের জিনিষপত্র সংগ্রহ করতে দেওয়া হয়নি । সম্পূর্ন অবৈধভাবে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান করে এলাকার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা হরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন AISA নেতৃত্ব । ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে AISA-র প্রতিনিধি দল দেখেন যে দিল্লী পুলিশ জাহাঙ্গীরপুরীর সি-ব্লকের মসজিদের আশেপাশের এলাকা সম্পূর্ন বন্ধ করে দিয়েছে । মেইন রোড সংলগ্ন রাস্তাগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এমনকি এলাকার বাসিন্দাদের বাইরে বেরোতেও দেওয়া হচ্ছে না । গোটা এলাকা শতাধিক পুলিশের প্রহরায় একটি উন্মুক্ত লকআপে পরিণত হয়েছে । ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য অবিলম্বে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে AISA নেতৃত্ব ।



  উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরপুরীর এই পুনর্বাসন কলোনিতে বিগত চার দশক ধরে মূলত বাংলাদেশি মুসলমানরা বসবাস করছেন । মাছ বিক্রি, ছোট ব্যবসা, হকারি, সাফাইকর্ম ইত্যাদিই তাদের জীবন-জীবিকা । বিজেপি এদের কখনো "বাংলাদেশি" কখনো "রোহিঙ্গা" আখ্যা দিয়ে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে । কিন্তু এরা প্রত্যেকেই ভারতের বৈধ নাগরিক বলেই দাবি জানিয়েছে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট । দলের পক্ষ থেকে ১৬ই এপ্রিল শনিবারের ওই নির্মম ঘটনার বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে । সঙ্ঘ পরিবার দেশকে কার্যত ও বিধিসম্মত সংখ্যাগুরু রাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন আইএসএফের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মাইতি । এই ঘটনার তদন্তে সুপ্রিমকোর্টের স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এগিয়ে আসা উচিত বলেই দাবি করেছেন তিনি ।

  অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত মেধা তালিকা ভুক্ত নবম-দ্বাদশ স্তরে হবু শিক্ষকদের গণ-অবস্থান ১৮৫ দিন অতিক্রম করলো । ধর্মতলার শহীদ মিনারে অবস্থানরত আন্দোলনকারীদের সাথে দেখা করে তাদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী । এর পাশাপাশি, আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানাতে শহীদ মিনারে উপস্থিত হন সিপিআইয়ের ছাত্র সংগঠন AISF-এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিষদের প্রতিনিধি দল । উপস্থিত ছিলেন AISF-এর রাজ্য সম্পাদক কমরেড বিক্রম বাহাদুর মন্ডল, সভাপতি কমরেড সৌমেন হালদার, যুগ্ম সম্পাদক ও আইনজীবী কমরেড রাজনীল মুখার্জি, কমরেড সরবন প্রসাদ প্রমুখ ।

Post a Comment

0 Comments