পরিকাঠামোগত অনুন্নয়নের জন্যই পিছিয়ে পড়ছে বাঁকুড়ার "বিষ্ণুপুর অনুশীলনী ক্লাব"
বিশ্বরূপ দে : নেই ওদের নিজস্ব কোন খেলার মাঠ, নেই আর্থিক স্বচ্ছলতা, নেই কোন পরিকাঠামো । থাকার মধ্যে আছে শুধু এক বুক প্রত্যয় আর প্রত্যাশা । এই নিয়েই ক্রীড়াবিদ হিসেবে নিজেদের পরিচয় গড়ে, রাজ্য তথা দেশের নাম উজ্বল করতে মরিয়া বাঁকুড়ার "বিষ্ণুপুর অনুশীলনী ক্লাব"-এর একদল কিশোর ও তরুণ প্রজন্ম ।
২০০৯ সালে প্রাক্তন ক্রীড়াবিদ মাননীয় রামপদ নামাথার উদ্যোগে বিষ্ণুপুরের চৌকান পঞ্চায়েত অন্তর্ভুক্ত বিষ্ণুপুর পাবলিক স্কুলের মাঠে, হাতে গোনা কয়েকটি কচিকাচা নিয়ে শুরু হয় দৌড়, লং জাম্প, হাই জাম্প, শটপাট ও জাভলিন থ্রো প্র্যাকটিস ।
আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল পরিবার থেকে উঠে আসা ক্রীড়াপ্রেমী ছেলেমেয়েদের উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি, জেলা, রাজ্য ও জাতীয় স্তরের খেলোয়াড় হিসেবে তাদের স্বীকৃতি লাভের লক্ষেই বিষ্ণুপুর অনুশীলনী ক্লাবের সূচনা করেন রামপদ নামাথা ।
লোকমুখে তাঁর এই ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানের কথা প্রচার পেতেই ক্রমশ ক্রীড়াপ্রেমী ছেলেমেয়েদের ভিড় বাড়তে শুরু করে অনুশীলন কেন্দ্রে । তাঁর প্রশিক্ষণেই এই প্রতিষ্ঠানের বহু ক্রীড়াবিদ জেলা ও রাজ্যস্তরে অংশগ্রহন করার সুযোগ পায় ।
কিন্তু একমাত্র পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণেই ক্রীড়াজগতে উজ্বল নক্ষত্রের সম্ভাবনা থাকা সত্বেও, থমকে পিছিয়ে আসতে হচ্ছে নতুন প্রজন্মের প্রাণবন্ত উৎসাহী ক্রীড়াবিদদের ।
সম্প্রতি করোনার পর বার্ধক্যজনিত কারণে নিয়মিত মাঠে এসে ছেলেমেয়েদের নিজে হাতে প্রশিক্ষণ দিতে না পারলেও, প্রতিনিয়ত তাদের অনুশীলনের যাবতীয় খোঁজ খবর নেন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা তথা বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ রামপদ নামাথা । তাঁর অনুপস্থিতিতে অনুশীলন পরিচালনা করেন ক্লাবেরই রাজ্যস্তরে অংশগ্রহণকারী সিনিয়র এথেলিট ঋষিকেশ দে(দৌড়বিদ), রাজ্যস্তরে নির্বাচিত স্বর্ণাভ বিশ্বাস(দৌড়বিদ) এবং বিশিষ্ট শিক্ষক শ্রীমন্ত দাস সহ অন্যান্য ক্রীড়াবিদ ।
সকলেরই বক্তব্য, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হলে বিষ্ণুপুরের এই অনুশীলনী ক্লাব থেকেই তৈরি হতে পারে ক্রীড়া জগতের বহু উজ্বল নক্ষত্র । এবিষয়ে সরকারি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন ক্লাবের সদস্যবৃন্দ এমনকি স্থানীয়রাও ।
এক সাক্ষাৎকারে দৌড়বিদ ঋষিকেশ দে, স্বর্ণাভ বিশ্বাস এবং প্রশিক্ষক শ্রীমন্ত দাস বললেন, "নিজস্ব খেলার মাঠ, শরীর চর্চার অত্যাধুনিক সরঞ্জাম, নিয়মিত অনুশীলন করানোর জন্য অভিজ্ঞ কোচের পাশাপাশি, ক্রীড়াবিদদের মনোবল অক্ষুন্ন রাখতে ক্লাবের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে আর্থিক সহায়তারও বিশেষ প্রয়োজন আছে । এই সমস্ত বিষয়ের অভাব থাকার দরুন জেলা বা রাজ্যস্তরে প্রতিনিধিত্ব করে পদক আনার সম্ভাবনা থাকা সত্বেও, অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে আসতে হচ্ছে বাঁকুড়ার "বিষ্ণুপুর অনুশীলনী ক্লাব"-এর ক্রীড়াবিদদের"।
এই অবস্থায় ক্লাবের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হস্তক্ষেপ জরুরি আছে বলে মনে করছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ ও নব প্রজন্মের ক্রীড়াবিদগন ।
0 Comments