আদিবাসীদের আন্দোলনকে পূর্ণ সংহতি জানিয়েছেন বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী
বিশ্বরূপ দে : ঐতিহাসিক হুল দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার হুগলির ফুরফুরা শরীফে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের উদ্যোগে এক সভা অনুষ্ঠিত হয় । উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক মোহাম্মাদ নওসাদ সিদ্দিকী, অফিস সম্পাদক নাসির উদ্দিন মীর, অতিশ্বর মান্ডি প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ । সভায় উপস্থিত বক্তারা ঐতিহাসিক হুল দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন ।
এদিনের সভায় বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী বলেন,"ঐতিহাসিক হুল আন্দোলনে সিধু-কানুদের নেতৃত্বে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে অনেকেই যোগ দিয়েছিলেন । বলা যেতে পারে ইংরেজদের বিরুদ্ধে ওটাই ছিল এইদেশের শোষিত-বঞ্চিত ও লাঞ্ছিতদের প্রথম বিদ্রোহাত্মক গণ আন্দোলন"। বর্তমান পরিস্থিতিতে জল-জমি-জঙ্গলের দাবিতে আদিবাসীরা দিকে দিকে যে আন্দোলন সংঘটিত করছেন, তার প্রতি পূর্ণ সংহতি জানান বিধায়ক ।
পশ্চিমবঙ্গে ২০০৬ সালের বনরক্ষা আইন সম্পুর্ণভাবে বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক । পাশাপাশি, কর্পোরেট লুঠেরাদের হাতে জমি তুলে দেওয়ার যে তোড়জোড় হচ্ছে তাকে বন্ধ করার জোরালো দাবি জানান তিনি ।
এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন,"জমি রাখতে হবে স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের হাতে । বীরভূমে দেউচা-পাচামি এলাকায় খোলা মুখ কয়লা প্রকল্প অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, কোনভাবেই স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের উচ্ছেদ করা যাবে না এবং ঐ এলাকার পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট করা যাবে না ।এছাড়া সংবিধানের পঞ্চম তপশিল লাগু এবং পৃথক সাঁওতালি শিক্ষা বোর্ড গঠন করতে হবে"।
সভায় উপস্থিত নাসির উদ্দিন মীর বলেন,"সিধু-কানুদের আত্মত্যাগকে সেভাবে তুলে ধরা হয়নি, মর্যাদা দেওয়া হয়নি । বেনিয়া গোষ্ঠীর হাতে দেশের সম্পত্তি বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে, তাই আজও সিধু কানুদের মতো নেতৃত্ব প্রয়োজন"। অতিশ্বর মান্ডি বলেন,"সিধু, কানু, চাঁদ ,ভৈরব, ফুলো ও ঝনু - ছয় ভাই বোনের পুরো পরিবার এই আন্দোলনে শহীদ হয়ে যায়, যা স্বাধীনতা আন্দোলনের এক অনন্য নজির"।
এদিনের সভায় বক্তাদের আলোচনা প্রসঙ্গে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে আইএসএফের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মাইতি বলেন,"দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু ও পিছিয়েপড়া মানুষের জন্য আন্দোলন করছে আইএসএফ । জল-জমি-জঙ্গলের অধিকার রক্ষার জন্য আইএসএফ-এর লড়াই জারি থাকবে"।
0 Comments