৯ই জুন বিরসা মুণ্ডার শহীদ দিবস
বিশ্বরূপ দে
৯ই জুন বিরসা মুন্ডার শহীদ দিবস । ব্রিটিশ সরকার ১৯০০ সালে বিরসাকে জেল হেফাজতে হত্যা করেছিলো । মাত্র ২৫ বছর বয়সে বিরসা শহীদ হন ।
বিদেশি ব্রিটিশ এবং এদেশি জমিদার ও ফড়েদের শাসনের অবসান ঘটিয়ে সাধারণ মানুষের নিজস্ব স্বাধীন দেশের আওয়াজ তুলেছিলেন বিরসা । প্রবল এক উলগুলানের মধ্যে দিয়ে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন এই শোষক এবং আঁতাতের ভিতকে ।
বিরসা ছিলেন ভগৎ সিংহের পূর্বসূরি । আদিবাসী সমাজের কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন ধরতি আবা । বিরসার "আবোয়া দিশম, আবোয়া রাজ" অর্থাৎ "আমাদের দেশ, আমাদের শাসন" শ্লোগানকে সামনে রেখে আজও ভারতের আদিবাসীদের লড়াই চালাতে হচ্ছে লুটেরা পুঁজিপতি ও সরকারের আঁতাতের বিরুদ্ধে ।
স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষে দেশব্যাপী স্বাধীনতার যে উৎসব উদযাপিত হয়, তা ঔপনিবেশিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে ভারতীয় সমাজের বিভিন্ন অংশের দীর্ঘ সংগ্রামের এক সম্মিলিত ফসল । ১৯৭৪-৭৯ সালের হালবা বিদ্রোহ থেকে শুরু করে ১৮৯০-র বিরসা মুণ্ডার উলগুলান সহ আদিবাসীদের বহু লড়াই স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকায় রেখেছে । তবুও আজ আদিবাসীরাই বঞ্চিত । ন্যুনতম প্রাপ্য সুযোগ সুবিধাগুলোও পায় না তারা । আদিবাসীদের অধিকাংশই চরম দারিদ্র্যে থাকে । অরণ্য ও আবাসভূমি থেকে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করে, প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস ও লুঠ করে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিচ্ছে শাসকদল । অপরদিকে এই শাসক দলগুলিই আবার স্বাধীনতা সংগ্রামকে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করে । ওরা স্বাধীনতা সংগ্রামে কৃষক, শ্রমিক, দলিত ও আদিবাসীদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকাকে অপমান করে । যেমন এই মোদি সরকার, জঙ্গল ও জমি থেকে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করছে, আদিবাসীদের অধিকার অস্বীকার করছে, আবার তারাই "জনজাতীয় গৌরব দিবস" নাম দিয়ে বিরসা মুন্ডার জন্মজয়ন্তি উদযাপন করে ।
বিরসা মুন্ডার শহীদ দিবসে এক বার্তা প্রকাশ করে সিপিআই (এমএল) লিবারেশন । উক্ত বার্তায় দলের নেতৃত্ব বলেন,"আদিবাসীদের উচ্ছেদ করে গৌরব দিবস পালন করা আসলে সিধু-কানু, ফুলো-ঝানো, বিরসা মুণ্ডা, মাকি মুণ্ডার মত শহীদদের অপমান করা । আমাদের পরিচিতি রক্ষা করতে, স্বাধীন ও আধুনিক ভারতে আমাদের অধিকারগুলি পরিপূর্ণভাবে বিকশিত করতে, আমাদের অবশ্যই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, কর্পোরেট লুট ও রাজনৈতিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই তীব্র করতে হবে এবং আদিবাসী প্রতিরোধের গৌরবোজ্জ্বল ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে"।
বিরসা মুন্ডার শহীদ দিবসে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভাঙরের আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী ।
0 Comments