স্থানীয় মানুষের কথায় এটি রঘু ডাকাতের মন্দির
তথ্য ও গবেষনা
মহঃ এন্থনি বোস
পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার সিঙ্গুর নিকটবর্তী পুরুষোত্তমপুরে অবস্থিত ডাকাতকালী মন্দির । একটি ভারত বিখ্যাত এক অতি প্রাচীন ও জাগ্রত কালী মন্দির । "Paranormal Science" এই মন্দিরটিকে গুপ্ত মন্দির হিসাবে চিন্থিত করেছে । অর্থাৎ আমাদের অলৌকিক দুনিয়ায় এই মন্দিরের গুরুত্ব অপরিসীম ।
স্থানীয় ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, মন্দিরটি বহুযুগ আগে রঘু ডাকাতের আমলে তৈরি হয় । সে থেকে বেশিরভাগ মানুষই এই মন্দিরটিকে "রঘু ডাকাতের মন্দির" বলেন ।
আটচালা মন্দিরের দেওয়ালে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি, বিষ্ণুদেবের দশাবতারের মূর্তি ও পোড়ামাটির লতাপাতা খোদিত রয়েছে, যদিও রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে বর্তমানে সেটা বোঝা দুষ্কর । মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রায় নয় ফুট উচ্চ মা ডাকাতকালীর বিগ্রহ রয়েছে । এই মন্দিরে মা কালী সিদ্ধেশ্বরী নামে পূজিতা ।
অতীতে এই স্থানটি ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ এবং প্রকান্ড গভীর থেকে গভীরতম জঙ্গল বেষ্টিত । সনাতনী ডাকাতদের প্রবল তাণ্ডবে এই স্থানে রাতে তো দূরের কথা, দিনেও কেউ পা দিতে সাহস পেতেন না । ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে রঘু ডাকাত ও তাঁর দলবল মায়ের পূজো দিয়ে তারপর ডাকাতির উদ্দেশ্যে অস্ত্রসজ্জিত হয়ে বের হতেন । যদিও তখন এখানে কোন মন্দির ও মায়ের মূর্তি ছিল না । মা কালীর নামে ঘট প্রতিষ্ঠা করে চলতো ডাকাতদলের পূজার্চনা । সেই প্রচলন থেকেই মা কালী "ডাকাতকালী" নামে পরিচিতা হন । পরে বর্ধমানের মহারাজ মা কালীর স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর প্রতিমা ও মন্দির হয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং দেবী সিদ্ধেশ্বরী নামে পূজিতা হন । যদিও পূর্ব প্রচলন অনুসারে আজও মায়ের বিগ্রহ ডাকাতকালী হিসেবেই দেশব্যাপী খ্যাতিলাভ করেছে ।
এই মন্দিরের গুরুত্ব ও অ্যাধ্যাত্মিক চেতনা সমগ্র সনাতনী মানুষদের কাছে পরম করুণাময়ী এবং পূজনীয় । দেবী এখানে সর্বদা বিরাজমান । জায়গাটিও এতটাই নিস্তব্ধতার মায়াজালে আবদ্ধ যে, এই জায়গায় কোন ব্যক্তি কিছুক্ষণ বসলেই, কিভাবে দীর্ঘ সময় অতিক্রম হয়ে যায়, তা বোঝাই যায় না ।
অলৌকিক দুনিযায় এই মন্দির একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে । বহু অতীতে এই স্থানে নরবলির প্রথাও ছিল, পরে পাঁঠা বলি এবং বর্তমানে কালীপূজোতে 'চালকুমড়ো' বলি দেওয়া হয় । (যদিও মায়ের পূজোর সাথে বলি অর্থাৎ নরবলি, পাঠাবলি বা কোনরকম বলি দেওয়ার কোন সম্পর্ক নেই, মাতৃ সাধনায় বলির অর্থ হলো - ছাগবলি । এক্ষেত্রে ছাগ শব্দের অর্থ হলো, ষররিপু । কাম, ক্রোধ, লোভ, হিংসা, মোহ ও মাৎসদ্য । ছাগবলি অর্থাৎ ষররিপুর বলি)।
এই মন্দিরের মাটি পবিত্র ও অপবিত্র দুইমেরুতেই ব্যবহার হয়ে থাকে । Paranormal Science অনুসারে, এই মন্দিরের বলিকাঠের মাটি অত্যন্ত শক্তিধারক এবং দুষ্ট দৈত্য প্রেতাত্মার কবল থেকে এই মাটির প্রভাবে মুক্তি পাওয়া যায়, কিন্তু সেটা বিশেষ নিয়ম ও পদ্ধতি মেনে করতে হবে এবং কিছু গুপ্তমন্ত্রের সাহায্যে (According To The Occult Science) । কিন্তু যদি একবার ভুল হয়ে যায় তাহলে..... Evil Energy-র শক্তি দ্বিগুন হয়ে যাবে, যার ফল অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ।
এই দেবীর অ্যাধ্যাত্মিকতার রহস্যের কিনারা করা শক্তি সাধক ছাড়া কারো পক্ষে সম্ভব নয় ।
0 Comments