সতীর অঙ্গচ্ছেদ আজও এক রহস্য

 ৫১টি শক্তিপীঠের মধ্যে ৪টি আজও অচিহ্নিত

তথ্য ও গবেষনা:

মহঃ এন্থনি বোস

        সকল শক্তিপীঠের নাম পুরানে উল্লেখ থাকলেও, এখনও পর্যন্ত মাত্র ৪৭টি পীঠের সন্ধান পাওয়া গেছে । বাকি ৪টি সতীপীঠ কোথায়, তা এখনও জানা যায়নি বা অচিহ্নিতই রয়ে গেছে ।

  শক্তিপীঠ হল হিন্দুধর্মের পবিত্রতম তীর্থস্থানগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য । পুরাণ মতে দক্ষ কন্যা সতীর দেহের অঙ্গগুলি চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে প্রস্তরীভূত হয়ে । আমরা সতীর ৫১ পীঠের কথাই সকলে জানি । কিন্তু শাস্ত্র ভেদে বিভিন্ন সংখ্যারও ভেদ লক্ষ করা যায় । পীঠ নির্ণয় তন্ত্র গ্রন্থ অনুযায়ী শক্তিপীঠের সংখ্যা ৫১ । শিবচরিত গ্রন্থে ৫১ পীঠের সাথে ২৬টি উপপীঠেরও উল্লেখ করা হয়েছে । আবার কুব্জিকাতন্ত্র গ্রন্থে শক্তিপীঠের সংখ্যা ৪২ । জ্ঞানার্নবতন্ত্রে আবার পীঠের সংখ্যা ৫০ । ভারতীয় উপমহাদেশেই শক্তিপীঠগুলি ছড়িয়ে রয়েছে । কিন্তু সব পীঠের সন্ধান এখনও মেলেনি । প্রাচীন কালেই সতীর পীঠগুলি চিহ্নিত করার কাজ সম্পন্ন হয়েছিল । ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে এই শক্তিপীঠ ।

  পূরাণে উল্লেখ, দক্ষরাজের কন্যা নিজ পিতৃগৃহে স্বামী নিন্দা শুনে দেহত্যাগ করেছিলেন । সতীর শোকে শিব রুদ্র মূর্তি ধারণ করেন এবং সতীর দেহ কাঁধে তুলে প্রলয় নৃত্য শরু করেন । তাঁর নৃত্যে যখন বিশ্ব ধ্বংস হতে শুরু করেছিলো, তখন ভগবান শ্রী বিষ্ণু তাঁর সুদর্শন চক্র প্রয়োগ করেন সতীর দেহে । তৎক্ষণাৎ সতীদেহ খন্ডিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে ।

  ধর্মীয় পন্ডিতদের শক্তিপীঠ নিয়ে আলোচনা করার রহস্য ক্রমে বেড়েই চলেছে । অজানা আর অচিহ্নিত সেই চারটি শক্তিপীঠ হল :

১) রত্নাভল শক্তিপীঠ- পুরাণের বিবরণ অনুযায়ী এই সতীপীঠ চেন্নাই এর কাছাকাছি কোন একটি স্থানে আছে । কিন্তু তার সন্ধান আজও পাওয়া যায়নি । পুরাণ অনুযায়ী এই স্থানে মা সতীর দক্ষিণ স্কন্ধ পড়েছিল । এই পীঠে মা সতীকে কুমারী এবং শিবকে ভৈরব নামে বর্ননা দেওয়া হয়েছে ।

২) কালমাধব শক্তিপীঠ- পুরাণে লেখা আছে যে এই স্থানে দেবীর নিতম্ব পতিত হয়েছিল । এখানে সতীর নাম কালমাধব এবং শিব হল অসিতানন্দ । কিন্তু এই পীঠ কোথায় আছে তার আজও সন্ধান মেলেনি ।

 

৩) শ্রীলঙ্কার শক্তিপীঠ- পুরাণের বর্ননায় আছে যে শ্রীলঙ্কায় সতীর দেহ পড়েনি । সেখানে দেবীর গহনা পড়েছিল । সেখানে দেবীর নাম ইন্দ্রাক্ষী এবং শিবের নাম রাক্ষসেশ্বর । আজও সেই সতীপীঠের সন্ধান মেলেনি । তবে ধারণা করা হয় এই শক্তিপীঠটি জাফনা উপদ্বীপের কোথাও অবস্থিত ।

 

৪) পঞ্চসাগর শক্তিপীঠ- পুরাণ মতে এই সতীপীঠে মায়ের চোয়াল পতিত হয়েছিল । এখানে মা সতী বারাহী নামে পরিচিতা । তবে পঞ্চসাগর যে কোথায় তা এখনও জানাই যায়নি ।