বিপুল সংখ্যক ভারতীয় কচ্ছপ উদ্ধার
বিশ্বরূপ দে-এর বিশেষ প্রতিবেদন
সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের ময়দান থানা এলাকা থেকে শতাধিক ভারতীয় কচ্ছপ সহ দুই ব্যক্তিকে বন্যপ্রাণ পাচারকারী সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ, ১৩ই জুলাই সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ধর্মতলার মা দুর্গা বাসস্ট্যান্ডে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় দুই ব্যক্তিকে । ময়দান থানার অফিসারদের নজরে পড়তেই সাব-ইন্সপেক্টর সন্দীপ দত্ত এবং শ্রাবন্তী ঘোষ ওই দুই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন । কিন্তু তাদের প্রশ্নের যথাযথ সদুত্তর দিতে না পারায় সন্দেহ হয় দুই অফিসারের এবং দুই ব্যক্তির হাতের ব্যাগ খুলে দেখাতে বলেন তারা । অবস্থা বেগতিক বুঝে ব্যাগ ফেলে পালাতে চেষ্টা করে ওই দুই সন্দেহভাজন ব্যক্তি । কিন্তু পালাতে অক্ষম হয় । ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় ময়দান থানার অন্যান্য আধিকারিক ও পুলিশ কর্মীরা । ব্যাগ খুলতেই দেখা যায় বিপুল সংখ্যক ছোট ছোট কচ্ছপ । সাথে সাথেই ওই ব্যাগ সমেত তাদের ময়দান থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং খবর দেওয়া হয় বন বিভাগে ।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিক ও কর্মীরা এসে দেখেন যে উদ্ধার হওয়া ৫০৯টি প্রাণী বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ইন্ডিয়ান স্টার টরটয়েজ বা ভারতীয় তারকা কচ্ছপ । ১৯৭২-এর বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের তফসিল-৪ মোতাবেক এই জাতীয় প্রাণী নিজের কাছে রাখা বা তাদের নিয়ে ব্যবসা করা নিষিদ্ধ ।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ওই কচ্ছপগুলি কোথা থেকে আনা হয়েছিল বা কোথায় পাচার করা হচ্ছিল, সেবিষয়ে এখনো কোন সন্তোষজনক উত্তর দেয়নি ধৃত ব্যক্তিরা । কাজেই পুলিশ ও বন বিভাগের সন্দেহ, এর পেছনে কোন বড় চক্রের হাত থাকতে পারে ।
তবে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে যে ধৃত দুজনেই তামিলনাড়ুর বাসিন্দা । একজন হলেন চেন্নাইয়ের দীনেশ কুমার ভেলাপ্পান (২১), অপরজন তিরুভান্নামালাইয়ের মহেশরাজ এডি (২৪)।
ময়দান থানার এসআই সন্দীপ দত্ত ও শ্রাবন্তী ঘোষের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণ পাচার সংক্রান্ত ফৌজদারি মামলা দায়ের করে গ্রেফতার করা হয়েছে । তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন এসআই শ্রাবন্তী ঘোষ ।
ঘটনার পরদিন অর্থাৎ ১৪ই জুলাই উদ্ধার হওয়া কচ্ছপগুলিকে আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয় ।
সমগ্র ঘটনা খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের বন্যপ্রাণ শাখার আধিকারিকরা ।
0 Comments