ব্রেকিং নিউজ

6/recent/ticker-posts

দীক্ষাগুরুর নির্দেশে মৃত শিশুর মৃতদেহ আগলে বাবা মা

নিজস্ব প্রতিনিধি : দ:২৪ পরগনা : দীক্ষাগুরুর নির্দেশে মৃত শিশুর বেঁচে ওঠার আশায়,  মৃতদেহ ১৮ ঘন্টা অন্ধকার ঘরে মধ্যে ফেলে রাখলেন বাবা মা। পিঁপড়ায় খুবলে খেলো শিশুর মৃত দেহ। কলকাতা থেকে ঢিল ছোরা দূরত্বে দক্ষিণ ২৪ পরগণার রাক্ষসখালির এ ঘটনাত হতবাক সুশীল সমাজ।
    
বইয়ের পাতায় মধ্যযুগীয় কুসংস্কার তো সেই কবে শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন মানুষ আদ্যোপান্ত মডার্ন। কিন্তু প্রদীপের নীচে অন্ধকার এখনও বিরাজ করছে। এখনও মানুষ মৃত্যুর পরও প্রিয়জনের বেঁচে ওঠার আশা করে। সেই আশায় মন্ডলীর দীক্ষাগুরুর বিধানে এক মৃত শিশুর দেহ ১৮ ঘন্টা অন্ধকারের মধ্যে ফেলে রাখলেন বাবা মা। ধরল পচন, পিঁপড়ে খুবলে খেলো শিশুটির দেহ। এমনই এক নির্মম ঘটনার সাক্ষী রইল দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার রাক্ষসখালি গ্রামের মানুষ।

 স্থানীয় বাসীন্দারা জানান,বৃহস্পতিবার বিকালে জলে ডুবে মারা যায় সেই শিশু। মৃত শিশুর নাম গৌরব মাইতি। স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরে শিশুটির দেহ বাড়ি ফিরে আনার পর রাক্ষসখালির ধর্মীয় মন্ডলীর কিছু মানুষ এসে মৃত শিশুটিকে অন্ধকার ঘরের মধ্যে রেখে ধুপধুনো ফুল দিয়ে প্রার্থনা করার নির্দেশ দেন। এবং সেই ঘরে প্রবেশ করতেও নিষেধ করেন। তারা বলেন এমন করলে,সকালে সন্তান মা বলে ডাকবে। তবে সকাল হলে কোনো উত্তর না পেয়ে বাবা-মা ঘরে প্রবেশ করলে দেখেন শিশুটির সারা শরীর পিঁপড়েতে খুবলে খেয়েছে। ঘটনায় এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং তারা ঘিরে ধরে ওই দীক্ষাগুরুর বাড়ি । 

এলাকাবাসীর দাবী, ধর্মগুরুর মন্ডলী বিভিন্ন ভাবে মানুষকে প্রভাবিত করছে বহুদিন ধরে।  

  পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মতিলাল মাইতি জানান, ধর্মীয় প্রথা মতে কবরস্থ করা হয় মৃত শিশুর দেহ কে। অভিযুক্ত এই ধর্মগুরুর শাস্তির দাবী করেছে  রাক্ষসখালির মানুষ।

তবে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন দীক্ষাগুরু মন্ডলীর এক সদস্যা। তার দাবী তারা কোনও বিধান দেয়নি। তাদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে এলাকার কিছু মানুষজন। 

স্থানীয় বিজ্ঞান মঞ্চ এর সম্পাদক জানান, কলকাতা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে হলেও, এখনও সচেতনতার আলো পোঁছায়নি সুন্দরবনের রাক্ষসখালিতে। তিনি স্বীকার করেন তাদের ব্যর্থতার কথা। 

একদিকে যেখানে তেরোশ কোটি বছর আগেকার ছবি পাঠাচ্ছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ,সেখানে মৃত শিশুর দেহ ১৮ ঘন্টা অন্ধকারের মধ্যে ফেলে রাখার মতো ঘটনা সম্পূর্ণ এক বিপরীত ছবি তুলে ধরছে। বিজ্ঞান ও তথা কথিত সভ্য সমাজ মুখ ঢাকছে লজ্জায়। কারণ বিজ্ঞান সচেতনতার নামে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ হয়, কিন্তু সচেতনতা সাধারণ মানষের দুয়ারে পৌছায় না। নিন্দুকেরা বলে, সুন্দরবনের উন্নয়নের মত সচেতনতাও অনেক আলোক বর্ষ দূরে।  

Post a Comment

0 Comments