A young man from Andhra Pradesh returned to his native place with signatures and tears in white clothes
নিজস্ব প্রতিবেদক, রামপুরহাট, ৩০ জুলাই ঃ বছর দুয়েক আগে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে বাড়ি ছেড়ে সুদুর অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসতে হয়েছিল বীরভূমের নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের ভদ্রপুর গ্রামে। এখন সেখান থেকে বদলি নিয়ে জন্মভিটেয় ফিরতে গিয়ে চোখের কোনে জল চিকচিকিয়ে উঠছে তাঁর। তাই প্রথম কর্মক্ষেত্রের স্মৃতি ধরে রাখতে নতুন জামার মধ্যে গ্রামবাসীদের সাক্ষর ধরে রাখলেন তিনি। কাছের মানুষদের মিষ্টিমুখ করিয়ে আশীর্বাদ চেয়ে নিলেন ভদ্রপুর পোষ্ট অফিসের পিওন মালা পরমেশ।
মালা পরমেশ। বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশের কুরনল জেলার বানাভানুর গ্রামে। ২০০০ সালে কর্মসূত্রে তাঁকে আসতে হয়েছিল বীরভূমের ভদ্রপুর গ্রামে। ওই গ্রামেই তিনি পিওনের পদে কাজ শুরু করেন। প্রথম দিকে ভাষাগত সমস্যায় পড়তে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু নিজের প্রচেষ্টায় কিছুদিনের মধ্যেই ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলা শিখে ফেলেন তিনি। দীর্ঘ দুই বছর ধরে বাড়ি বাড়ি চিঠি পৌঁছে দিয়ে তিনি এখন এলাকার প্রিয়জন হয়ে উঠেছিলেন। দিন দুয়েক আগে তাঁর বদলির কাগজ এসে পৌঁছয়। তাঁকে দ্বিতীয় পোস্টিং দেওয়া হয়েছে নিজের গ্রামেই। শনিবার নিজের রাজে্য দেরার আগে একটি সাদা জামা কিনে তাতে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে সাক্ষর করিয়ে নিলেন স্মৃতি হিসাবে। কারও কারও ফোন নম্বর থেকে গেল জামার মধ্যেই। প্রাণেশ বলেন, “আমি যখন এখানে কাজে যোগদান করি তখন বাংলা জানতাম না। ফলে খুব সমস্যা হত। কিন্তু এলাকার মানুষ যেভাবে আমার পাশে থেকেছেন সেটা আমি সারা জীবনেও ভুলতে পারব না। আমি কৃতজ্ঞ ভদ্রপুরের মানুষের কাছে। তাই জামার মধ্যে গ্রামবাসীর সাক্ষর ও ফোন নম্বর সংগ্রহ করে রাখলাম। নিজের গ্রামে ফিরে গিয়ে এই জামাকেই স্মৃতি হিসাবে আঁকড়ে রাখব”।
স্থানীয় বাসিন্দা শুভাশিস ভট্টাচার্য বলেন, “পরমেশ প্রথম যখন ভদ্রপুরে আসেন তখন ভাষা সমস্যায় ভুগছিল। আমাদের কাছে এসে বাংলা ভাষাকে রপ্ত করেছে। এখন বদলি নিয়ে নিজের গ্রামে ফিরছে। তাই আমাদের নাম তাঁর স্মৃতির মনিকোঠায় ধরে রাখতে জামার মধ্যে সাক্ষর ও ফোন নম্বর সংগ্রহ করে রাখছে। আমাদের খুব খারাপ লাগছে পরমেশ বদলি হয়ে যাওয়ায়”।
0 Comments