নিজস্ব প্রতিনিধি, বোলপুর, ২৩ জুলাই ঃ ইডি’র গ্রেফতারের পরেই শান্তিনিকেতন এলাকায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামে একাধিক বাড়ির খোঁজ মিলল। সেই সমস্ত বাড়ি পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায় ও মোনালিসা দাসের নামে রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে বর্তমানে সব ঘরেই তালা ঝুলছে। এনিয়ে সরাসরি মুখ খুলতে চাইছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিনিকেতন এলাকার ফুলডাঙা, বনভিলা, জাম্বুনি বাস স্ট্যান্ড ও প্রান্তিক এলাকায় সাতটি বাড়ির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারের পরেই সেই বাড়িতে স্থানীয় মানুষজন উঁকিঝুঁকি মারতে শুরু করেছেন। কারণ রাতের অন্ধকারে এই বাড়ি গুলিতেই রাত্রি বাস করতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে বাড়ি গুলির কোনটির নাম অপা, কোনটি তিতলি, চারবাড়ি ইত্যাদি ইত্যাদি। ফুলডাঙ্গার বাড়ির নাম অর্পিতা ও পার্থর নামের মিল করে দেওয়া হয়েছে ‘অপা’। এছাড়াও জাম্বুনি বাস স্ট্যান্ড এলাকায় একটি চার হাজার স্কোয়ার ফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। যেখানে নিয়মিত যাতায়াত করতেন অর্পিতা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের বাসিন্দা মোনালিসা দাস বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। সেখানেই এক যুবকের সঙ্গে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হন মোনালিসা। স্বামী ছিলেন বিমান চালক। স্বামীর মাধ্যমেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে মোনালিসার। সালটা ২০১২। এরপরেই পার্থবাবুর শান্তিনিকেতন যাতায়াত বেড়ে যায়। মোনালিসাকে আসানসোলের একটি কলেজে অধ্যাপিকা হিসাবে কাজে ঢুকিয়ে দেন পার্থবাবু। সেই থেকেই শান্তিনিকেতন এলাকায় একেরপর এক বাড়ি কিনতে শুরু করেন পার্থবাবু। ২০১৬ সালে অর্পিতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। ফলে দুরত্ব বাড়ে মোনালিসার সঙ্গে। ফলে অধিকাংশ বাড়িই দেখভাল করতেন অর্পিতা। এদিকে পার্থবাবুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যাওয়ায় স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় মোনালিসার। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাড়ি গুলির অধিকাংশই বাগান বাড়ি গোচ্ছের। মাঝে মধ্যেই সেখানে পার্থ – অর্পিতা থাকতেন। বিশেষ করে শিক্ষা মন্ত্রী থাকাকালীন পার্থবাবু বেশি যাতায়াত করতেন বলে খবর। রাতের দিকে এসে পরের দিন রাতের অন্ধকারেই তাঁরা কলকাতা ফিরে যেতেন। তবে পার্থবাবুর শান্তিনিকেতন যাতায়াত অজানা ছিল তৃণমূল নেতাদের। তবে এনিয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি।
জাম্বুনি ফ্ল্যাটের প্রতিবেশী বিদ্যুৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “চার হাজার স্কোয়ার ফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। ২০১৩ সালে ফ্ল্যাটটি পার্থ চট্টোপাধ্যায় কেনেন। সেখানে মাঝে মধ্যেই অর্পিতা দামি দামি গাড়ি নিয়ে আসতেন। কিছুক্ষণ থেকে ফের বেরিয়ে যেতেন। বাড়ির ভিতর দামি দামি জিনিস দিয়ে সাজানো হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে বাড়ি সাজানোর কাজ করা হয়েছে। তবে ফ্ল্যাটের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ না দেওয়ায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে তাঁর বচসা হত। সে সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে চমকাতেন। তবে ওই ফ্ল্যাটে পার্থবাবু কোন দিন আসেননি। এই ফ্ল্যাটের চাবি এখন রয়েছে প্রশান্ত রায় নাম এক স্থানীয় বাসিন্দার কাছে”।
0 Comments