ব্রেকিং নিউজ

6/recent/ticker-posts

বাংলায় বিজেপির জনসমর্থন তলানিতে নামার কারণ "অন্তর কলহ"?

 

নিজস্ব প্রতিনিধি : বঙ্গ রাজনীতিতে বিজেপির জনসমর্থন কি ক্রমশ কমছে ? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এই মুহূর্তে পশ্চিমবাংলায় বিজেপির জনসমর্থন অনেক কমেছে । ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচন এবং ২১ এর বিধান সভা নির্বাচনের ফলের দিকে তাকালে বিষয়টি একেবারে পরিষ্কার। যার ফলে ২০২১ এর বিধানসভা ভোটে পশ্চিমবাংলায় ২০০ আসন পাবে বলে মনে করেছিল বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব সে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে পারেনি তারা। যারফলে সেই সংখক আসন পায়নি বিজেপি ।  জনসমর্থন ক্রমশ নিম্নমুখী হওয়ার কারন কি ? বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য অনেক চুল চেরা বিশ্লেষণ করেছেন তবে সেটা মাঠে ময়দানে নয় কাগজে কলমে । যার কারনে নিচু তলার কর্মীদের বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে দলের অবস্থান । নিচু তলার কর্মীদের মনোবল কোন অবস্থানে সেটা পর্যালোচনা কাগজে কলমে হয় কি ? প্রশ্ন তুলছেন বিজেপি নিচু তলার কর্মীরা।

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর নির্বাচন উত্তর সহিংসতায় বিজেপির বেশ কিছু কর্মী সমর্থক মারা গেছেন। সেখানেও নিচু তলার কর্মীদের অভিযোগ উপরতলার নেতা-নেত্রীরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় নি। এমনকি নেতানেত্রিদের মনেই হয়নি নিচু তলার কর্মীদের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন তাদের মনোবল সাহস যোগানোর প্রয়োজন।।

উপরতলার নেতা-নেত্রীদের অহম বোধ এর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সম্প্রতি বিজেপির সাংসদ বিধায়করা বিভিন্নভাবে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। বিজেপির Whatsapp গ্রুপ থেকে তারা অনেকেই বেরিয়ে গেছেন। কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন যথাযথ গুরুত্ব পাচ্ছেন না তারা দলে। মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত সাংসদ বিধায়করা ও দলে বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। দলে তারা সমান গুরুত্ব পাচ্ছেন না বলে অভিযোগও করেছেন। CAA লাগু না হওয়ার জন্য তারা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।

২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত যেভাবে তৃণমূল এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। ঠিক সেইভাবে ২০২১ এর নির্বাচন উত্তর কালে আবার তারা দল ছেড়ে চলে গেছেন। মুকুল রায়, অর্জুন সিং, সব্যসাচী দত্ত, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো আরো অনেক নিচু তলার কর্মীরা পুনরায় তৃণমূল দরে ফিরে গেছেন।

২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে শতাংশের নিরিখে বিচার করলে বিজেপি তৃণমূলের থেকে খুব বেশি পিছিয়ে ছিল না । তৃণমূল পেয়েছিল ৪৩. ৬৯% ।সেখানে বিজেপির প্রাপ্ত পার্সেন্টেজ ছিল ৪০.৬৪%। আসন সংখ্যারও খুব বেশি ব্যবধান ছিল না। ২২ টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল এবং 18 টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। সেখানে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে ভোট পার্সেন্টেজের অনেকটা ব্যবধান হয়ে যায়।। যদিও বিজেপির প্রত্যাশিত ফল না হওয়ায় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মনোবল ভেঙ্গে যায়। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৭৭ টি আসন পেলেও বিজেপি তা ধরে রাখতে পারেনি। তাছাড়া ক্ষমতায় আসার স্বপ্নভঙ্গ হওয়ায় অনেকেই দল ছাড়ার চিন্তাভাবনা শুরু করে। সব মিলিয়ে বিজেপিতে নির্বাচন উত্তরকালে ক্রমশ ভাঙ্গন শুরু হয়।

এর সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বদের অন্তর কলহ এই জনসমর্থন তলানিতে নামার অন্যতম কারণ বলে মনে করছে বিজেপি দলেরই নেতাকর্মীরা। মুকুল রায়ের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি দলে যোগ দেওয়া এবং নির্বাচন পরবর্তী সময় আবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন রকম গুঞ্জন রয়েছে । অনেকেই মনে করছেন ক্ষমতায় আসার স্বপ্নভঙ্গ হওয়ায় তৃণমূল দল থেকে আসা এইসব নেতৃত্ব আবার তৃণমূলের পুনরায় ফিরে গেছেন।।

নির্বাচন উত্তর কালে দলের নিচু তলার কর্মীদের হেনস্থার শিকার হওয়া এবং দল থেকে একের পর এক নেতৃত্ব অন্য দলে চলে যাওয়ায় বিজেপি তৃণমূল স্তরের কর্মীদের মনোবল একেবারেই ভেঙে যায়। কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে তার ফলস্বরূপ ব্যাপক ভরাডুবি হয় বিজেপির।

দিলীপ ঘোষ কে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে  সারানোর পরে নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার হলেও সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি বলে মনে করছেন বিজেপি কর্মীরাই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন এই মুহূর্তে পশ্চিমবাংলায বিজেপির জনসমর্থন যেভাবে তলানিতে নেমেছে তাতে ২০২৪ এর লোকসভা ভোটে ১৮টি আসন ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ হবে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বদের।




Post a Comment

0 Comments