শৈশবের বিশ্ব ব্রম্ভান্ডের ছবি পাঠাল নাসার পাঠানো মহাকাশ ক্যামেরা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ । পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দুর থেকে সে ক্যামেরা বন্দি করেছে তেরোশো কোটি বছর আগেকার ছবি। প্রকাশেরসঙ্গে সঙ্গেই প্রথম আলোর সেই দীপ্তি দেখে মুগ্ধ নেটিজেনরা।
বিশ্ব ব্রম্ভান্ডের শৈশবের ছবি প্রকাশ্যে এল এতদিনে। সৌজন্যে নাসার মশাকাশে পাঠানো ক্যামেরা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। কত প্রাচীন এই ছবি ? বিজ্ঞানীরা বলছেন তেরোশো কোটি বছর আগেকার বিশ্ব ব্রম্ভান্ডের হামাগুড়ি দেবার সময়কার ছবি লেন্স বন্দি করতে সমর্থ হয়েছে নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংস তার বিগ ব্যাঙ থিওরিতে হিসেব নিকেশ করে দেখিয়ে ছিলেন আমাদের এই বিশ্ব ব্রম্ভান্ডের বয়স প্রায় তেরশো সত্তর কোটি বছর। বিগ ব্যাঙ বা মহা বিস্ফোরণের মাত্র ৬০ কোটি বছর পরের সেই দৃশ্য এবার লেন্স বন্দি করতে সমর্থ হল নাসার জেমস ওয়ের টেলিস্কোপ। মঙ্গলবার ভারতীয় সময় ভোরে বিশ্বের প্রাচীনতম এই এই ছবি হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠক করে পেশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেসময় তার পাশে বসে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও নাসার কর্তা বিল নেলসন।
কিন্তু কেন এই ছবি নিয়ে বৈজ্ঞানিক থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে এতো মাতামাতি। বৈজ্ঞানিকরা বলছেন কাজটা মোটেই সহজ ছিল না। আমাদের পৃথিবীর বর্তমান বয়স প্রায় সাড়ে চারশো কোটি বছর। অর্থাত নিজের জন্মের প্রায় তিনগুন আগের ছবি ধরা পড়েছে নাসার পাঠানো মহাকাশ ক্যামেরার লেন্সে। তা শুনে রসিক নেট নাগরিকরা বলছেন বিষয়টা বর্তমান সময় দাড়িয়ে ঠাকুর্দার বাবার বিয়ের সময়কার ছবি তোলার মতোই দুরহ ব্যাপার।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে লাগানো রয়েছে ১৮ টি ষড়ভূজ আয়না। যার মোট ব্যাস ৬.৫ মিটার। ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দুরের এই টেলিস্কোপকে সূর্য ও মহাকাশের অন্যান্য নক্ষত্রের ক্ষতিকর আল্ট্রা ভাযোলেট রষ্মির হাত থেকে বাঁচাতে রয়েছে ৫ টি পর্দা। যার এক একটির মাপ টেনিস কোর্টের সমান। মহাকাশে নাসাকে এই ক্যামেরা পাঠাতে খরচ হয়েছে হাজার কোটি ডলার। আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সাহায্য করেছে ইউরোপিয় মহাকাশ সংস্থা ও কানাডার মহাকাশ সংস্থা। বিজ্ঞানীরা বলছেন ঠাকুরদার হামাগুড়ি দেবার চিত্র তো পাওয়া গেল, এবার খোঁজ করতে হবে অ্যান্টি ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জির। কারন ব্রহ্মান্ড সৃষ্টির লগ্নে একই সময় জন্ম হয়েছিল দুই যমজ শিশু ম্যাটার ও অ্যান্টি ম্যাটারের। সারা ব্রম্ভান্ড জুড়েই ম্যাটার বা পদার্থের দাপাদাপি। আরেক যমজ ভাই অপদার্থ বা অ্যান্টি ম্যাটার তাহলে কোথায় গেল ? বিজ্ঞানীরা বলছেন এবার সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার কাজও সহজ হবে। তারা আশাবাদী অদুর ভবিষ্যতে ম্যাটার বা পদার্থের সেই হারিয়ে যাওয়া যমজ ভাই অ্যান্টি ম্যাটারেরও খোঁজ পাওয়া যাবে নিশ্চিত।
0 Comments