ব্রেকিং নিউজ

6/recent/ticker-posts

সাংগঠনিক রদবদলে মমতা পন্থীদের দাপট স্পষ্ট

Mamata supporters gained more importance in the reshuffle of the cabinet

নিজস্ব প্রতিনিধি , কলকাতা : দুর্নীতি ইস্যুতে যথেষ্ট কোণঠাসা রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস, এমতাবস্তায় দলের ও সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক এবং সাংগঠনিক স্তরে কামরাজ প্ল্যান বাস্তবায়িত করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছিল। যদিও বাস্তবে  দেখা গেল সাংগঠনিক ক্ষেত্রে  মমতা পন্থী পুরনো মুখের উপরই ভরসা রেখেছে ঘাসফুল শিবির। সোমবার তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলে দলের মমতা পন্থী হিসেবে পরিচিত দের দাপট স্পষ্ট। 

পথ ভাবে আমি দেব' রথ ভাবে আমি,মূর্তি ভাবে আমি দেব হাসেন অন্তর্যামী। গত বেশ কয়েকদিন ধরেই তৃণমূলের অবস্থাটা সঙ্গেই প্রবাদ বাক্য টা মিলে যাচ্ছিল।  বিশেষ করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারের পর থেকেই দলের মধ্যেই মাথাচাড়া দিচ্ছিল বেশকিছু লবি।  তবে সবচেয়ে বেশি দড়ি টানাটানি চলছিল দলের সুপ্রিমো এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের লবির মধ্যেই।  গত বেশ কয়েকদিন ধরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠদের অতি সক্রিয়তা নজর এড়ায়নি রাজনৈতিক মহলের।  তবে দলীয় রদবদলেও দেখা গেল প্রশাসনিক স্তর এর পাশাপাশি দলের অন্দরে ও অক্ষুন্ন মমতা আঁটুনি। বুধবার দলের সাংগঠনিক পদে একাধিক পরিবর্তন করা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেল মমতা ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নেতা-নেত্রীরা স্বপদে বহাল রয়েছেন। এমনকি মমতা পন্থী হওয়ার পাশাপাশি কট্টর অভিষেক বিরোধী হিসেবে পরিচিত নেতারাও বহাল রয়েছেন স্বপদে।  হুগলির শ্রীরামপুরে সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান অসীমা পাত্র যিনি দলেই একনিষ্ঠ মমতা পন্থী হিসেবে পরিচিত তিনি রয়ে গিয়েছেন স্বপদেই আবার হাওড়া আরবানের সভাপতি  কল্যানেন্দু ঘোষ তিনিও ধরে রেখেছেন নিজের পদ।  তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনার কেন্দ্রে ছিল যে নামটি তিনি হলেন উত্তর কলকাতার সংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।  দলের অন্দরে এবং বাইরে ঘোষিত অভিষেক বিরোধী হিসেবেই পরিচিত উত্তর কলকাতার এই জনপ্রিয় নেতা।  তৃণমূলের লোকসভার দলনেতার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কে উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানোর জন্য দলের অভিষেক পন্থী অংশের চাপ যথেষ্ট ছিল বলে খবর শাসকদল সূত্রে,যদিও সেই চাপ অগ্রাহ্য করে উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতির পথেই রয়ে গেলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।  কয়লা পাচার,গরু পাচার,ভোট-পরবর্তী হিংসা  সহ একাধিক অভিযোগ থাকা  সত্ত্বেও শুধুমাত্র মমতার প্রতি শর্তহীন আনুগত্যের কারণেই  বীরভূমের কেষ্ট কে স্বপদে রেখে দেওয়া হল বলে মত রাজনৈতিক মহলের। অন্যদিকে অভিষেক ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত  বেশ কয়েকজন নেতাকে হারাতে হলো তাদের পদ।  এর মধ্যে যে নামগুলি উল্লেখযোগ্য তার মধ্যে অবশ্যই রয়েছে কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী,পার্থ ভৌমিকেরা। ইংরেজবাজার পৌরসভা চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী কে মালদা জেলার চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সমার মুখার্জী যিনি আবার  মমতা ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।  অন্যদিকে উত্তর 24 পরগনার দমদম ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতির পদ থেকে পার্থ ভৌমিক কে সরিয়ে দেওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।  পার্থ ভৌমিক রাজ্য রাজনীতিতে অভিষেক ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।  যদিও অভিষেক ঘনিষ্ঠ পার্থ কে মন্ত্রিত্ব দেয়া হবে বলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত যদি পার্থ ভৌমিক মন্ত্রিত্ব না পান তাহলে তার রাজনৈতিক উত্থান এর গ্রাফ যে যথেষ্টই ধাক্কা খাবে তা বলাই বাহুল্য।  সবমিলিয়ে সোমবারের সাংগঠনিক রদবদলে কে মমতাময়ী রদবদলে বললে বোধহয় অত্যুক্তি করা হবে না।

Post a Comment

0 Comments