টানা ছুটিতে এই সময়ে বহু পর্যটক বোলপুর-শান্তিনিকেতনে বেড়াতে যান। আর সপ্তহান্তে বোলপুরের অন্যতম আকর্ষণ হল সোনাঝুরির হাট। হঠাৎ করে হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় বীরভূমের দাপুটে নেতা গ্রেফতারির যোগ রয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
সপ্তাহান্তে শনি ও রবিবার সকালে সোনাঝুরির মাঠে হাট বসে। তারপর সন্ধ্যা হতেই সেই হাট উঠে যায়। বহু বছর ধরে একইভাবে চলে আসা এই সোনাঝুরির হাট যেমন বোলপুর-শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য, তেমনই বোলপুর-শান্তিনিকেতনবাসী থেকে পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এই হাটে বোলপুরের শিল্পীদের হাতে তৈরি ডায়েরি, ঘর সাজানোর উপকরণ থেকে শান্তিনিকেতনী কাজ করা কুর্তা, পাঞ্জাবি, শাড়ি সহ নানান খাবার সামগ্রী বিক্রি হয়। শিল্পীরা নিজেরাই তাঁদের পসরা হাটে সাজিয়ে বসেন।
আর শান্তিনিকেতনী বিভিন্ন পসরার সঙ্গে উপরিপাওনা হিসাবে থাকে আদিবাসী নৃত্য এবং বোলপুরের বিখ্যাত বাউল গান। এই বাউল গানের টানে বহু পর্যটক সোনাঝুরির হাটে আসেন। আবার আদিবাসী নৃত্যের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে কোমরও দোলান কলকাতা সহ দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা। আর পর্যটকদের কিছুটা আনন্দ দিয়েই সপ্তাহান্তে সোনাঝুরির হাটে উপার্জন করেন বোলপুরের আদিবাসী সম্প্রদায়। শান্তিনিকেতনের শিল্পীরাও সপ্তাহান্তের এই দুটি দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক সোনাঝুরির হাটে আসেন। তাঁদের কাছে শান্তিনিকেতনী নকশা করা সামগ্রী বিক্রি করে উপার্জন করেন শিল্পীরা।
কোভিডকালে লকডাউনের সময় এবং বিশেষ কারণ ছাড়া সাধারণত সোনাঝুরি হাট বন্ধ হওয়ার কথা শোনা যায়নি। এদিন হঠাৎ করে সেই হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মন খারাপ বিক্রেতা থেকে পর্যটকদের। হাট বন্ধের ব্যাপারে আগাম কোনও ঘোষণা ছিল না। ফলে অনেক বিক্রেতা যেমন তাঁদের পসরা নিয়ে হাটে গিয়েও ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক শেখ কুরবানি বলেন, অনুব্রত মণ্ডলের অনৈতিক গ্রেফতারির প্রতিবাদে আমরা সোনাঝুরির হাটে একদিনের জন্য বন্ধ করছি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা হঠাত করে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছে তাই আমরা তড়িঘড়ি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পর্যটকদের অনুসবিধা হচ্ছে আমরা জানি। কিন্তু আমরাও তো আর্থিক ভাবে খতিগ্রস্থ হচ্ছি”।
স্থানীয় জল বিক্রেতা বলেন, “তৃণমূল সংগঠন থেকে বন্ধ করা হয়েছে। আজ আমরা বেকার হয়ে গেলাম। বিকেলে আবার মিছিলে যেতে হবে। আমরা আর্থিকভাবে খতিগ্রস্থ হলাম”।
0 Comments