নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ রাইসিনা হিল্ স থেকে ঝাড়খন্ডের দূরত্ব কত?ভৌগলিক দূরত্ব যাই হোক না কেন বাস্তবিক দূরত্ব কিন্তু কয়ের কোটি আলোকবর্ষ। আজাদী কি অমৃত মহোৎসবে দেশের রাষ্টপতি পদে বসেছেন একজন আদিবাসী মহিলা, কিন্তু তাতে আদিবাসীদের প্রকৃত অবস্থার কি কোন পরিবর্তন হয়েছে? রাষ্টপতি দ্রৌপদী মূর্মুর নিজের রাজ্যের ঘটনা কিন্তু সেই প্রশ্ন তুলে দিল।
তিনি শাসকদলের মহিলা শাখার জাতীর কর্মসমিতির সদস্য, গোটা দেশের মহিলাদের অধিকার সুনিশ্চিত করার বিষয়ে তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ। শিশু কন্যাদের অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের জনপ্রিয় প্রকল্প বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও এর ঝাড়খন্ড রাজ্যের আহ্বায়ক তিনি। তবে প্রদীপের তলায় অন্ধকারের মতোই তার নিজের বাড়িতেই প্রতিদিন লুঠ হয়েছে নারীর অধিকার, ক্ষমতার দম্ভে নগ্ন হয়েছে মানবিকতা। ঝাড়খন্ড বিজেপির অন্যতম মুখ সীমা পাত্র যিনি জাতীয় রাজনীতির ময়দানেও পরিচিত মুখ। বিজেপির জাতীয় মহিলা কার্যকরী সমিতির সদস্য সীমা পাত্রের বিরুদ্ধে তার গৃহকর্মে সহায়কের বিরুদ্ধে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগে তোলপাড় জাতীয় তথা রাজ্য রাজনীতি। ঝাড়খণ্ডের গুমলার বাসিন্দা এক আদিবাসী মহিলা সুনীতার বাড়িতে গৃহকর্মে সহায়ক হিসেবে নিযুক্ত হন। অভিযোগ কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তার ওপর অমানবিক অতাচার শুরু হয়। এমনকি লোহার রড দিয়ে মারা ও লোহার প্যান গরম করে ছঁ্যাকা দেওয়ার মতো অভিযোগও উঠেছে। এখন ঝাড়খণ্ডের এক হাসপাতালের চিকিৎসা চলছে আক্রান্ত মহিলার। চোখে মুখে চরম আতঙ্ক নিয়ে কার্যত কথাই বলতে কষ্ট হচ্ছে। হঠাৎই চোখ গেল তার মুখের দিকে, যেখানে অবিন্যস্ত ভাবে দেখা যাচ্ছে কয়েকটি দাঁত। কারণ জানতে চাইলে যা শোনা গেল তা একেবারে আঁতকে ওঠার মতো। মাননীয়া নেত্রী বিভিন্ন সময় তার দাঁত উপড়ে ফেলেছেন, হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন সীমা পাত্র তার গৃহকাজে সাহায্য কারীর দাঁত উপড়ে ফেলেছেন, না এখনও শেষ হয়নি, নিজেদের সভ্য সমাজের প্রতিনিধি দাবি করা আমার আপনার লজ্জা পাওয়ার এখনও বাকি আছে। বিজেপি নেত্রী সীমা পাত্র ওই আদিবাসী মহিলাকে নিজের মূত্রপান করতে বাধ্য করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ভয়েস অফ দলিত নামে একটি ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে নিপীড়িত মহিলার ভিডিও প্রকাশ করার পরই নিন্দার ঝড় উঠেছে গোটা দেশজুড়ে। ইতিমধ্যেই সীমা পাত্রকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঝাড়খন্ড বিজেপি। জাতীয় মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকেও বিষয়টির ওপর নজর রাখা হচ্ছে, এই বিষয়ে ঝাড়খন্ড পুলিশকে নিরপেক্ষ তদন্ত সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে কমিশনের তরফে। তবে শুধুমাত্র তদন্তে আশ্বাস নয় অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে জোরালো হচ্ছে প্রতিবাদী কন্ঠ। কোন কোন নেটনাগরিক অভিযুক্তের ফাঁসিরও দাবি জানিয়েছেন।
0 Comments