ব্রেকিং নিউজ

6/recent/ticker-posts

আশ্রমের নামে জালিয়াতি ব্যবসা - গ্রেফতার এক, বাকিরা ফেরার

 সন্তান দত্তক দেওয়ার নামে চলতো জালিয়াতি ব্যবসা

বিশেষ প্রতিবেদন:

বিশ্বরূপ দে


        সন্তান দত্তক দেওয়ার ফাঁদ পেতে নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্রকারী এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করলো কলকাতার হরিদেবপুর থানার পুলিশ । 

  একটি আশ্রমের সন্দেহজনক বিজ্ঞাপনী পোস্টার দেখেই জালিয়াতি চক্রের হদিশ পায় পুলিশ । 

  প্রসঙ্গত উল্লেখ, কবরডাঙ্গা মোড়ের কাছে রাউন্ডে ছিলেন হরিদেবপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর প্রীতম বিশ্বাস । তখনই নজরে পড়ে একটি বিজ্ঞাপনী পোস্টার, যেটির বক্তব্যের সারমর্ম, ‘সন্তান দত্তক নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা আমাদের আশ্রমে যোগাযোগ করুন’। সঙ্গে দেওয়া রয়েছে দুটি ফোন নম্বর, একটি ল্যান্ডলাইন ও একটি মোবাইল । বিজ্ঞাপনের ভাষা এবং চেহারাছবি দেখেই সন্দেহ জাগে প্রীতম বিশ্বাসের মনে । বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত জনৈক রঞ্জিত দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই সন্দেহ দৃঢ়তর হয় । পুলিশকে রঞ্জিত জানান, তিনি, তাঁর স্ত্রী মাধবী রায়, আত্মীয়া সুপ্রিয়া নাইয়া সহ আরো অনেকে মিলে চালান এই ‘আশ্রম’, যার পোশাকি নাম "শ্রী রামকৃষ্ণ নতুন জীবনদান সেবাশ্রম"। এই আশ্রম থেকেই সন্তানহীন দম্পতিদের ‘সহজে দত্তক নেওয়ার সুবিধা’ দেওয়া হয় , প্রতিটি শিশুর ‘মূল্য’ চার লক্ষ টাকা । 

  হরিদেবপুর থানার ওসি ইন্সপেক্টর সুব্রত দে-কে গোটা ঘটনা অবিলম্বে জানান সাব-ইন্সপেক্টর প্রীতম বিশ্বাস, এবং ওসির নির্দেশে রঞ্জিতের ঠিকানায় তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, আশ্রম ও তার কার্যকলাপ সংক্রান্ত কোনও বৈধ নথিপত্র নেই তাদের কাছে । যা কাগজপত্র আছে, তা থেকে স্পষ্টই বোঝা যায় যে সন্তান দত্তক নেওয়ার নামে চলছে জালিয়াতির ব্যবসা, সন্তানহীন দম্পতিদের আশা-আকাঙ্ক্ষার সুযোগ নিয়ে তাঁদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা, যা ভারতীয় দণ্ডবিধির শাস্তিযোগ্য অপরাধের আওতাধীন । 

  সেই ভিত্তিতেই ২রা নভেম্বর রাত ১১.১৫ মিনিট নাগাদ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় রঞ্জিত রায়কে, বাকিরা ফেরার । বাজেয়াপ্ত করা হয় বেশ কিছু বিজ্ঞাপনী পোস্টার এবং নথিপত্র । কবরডাঙ্গা মোড়ে প্রদর্শিত পোস্টারটিও তুলে নিয়ে আসা হয় থানায় । 

  হরিদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি ইন্সপেক্টর সুব্রত দে-র নির্দেশে রঞ্জিত রায় (৪৬), মাধবী রায় (৩৫), সুপ্রিয়া নাইয়া, ও আশ্রমের অন্যান্যদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে এফআইআর দায়ের করেন অভিযোগকারী সাব-ইন্সপেক্টর প্রীতম বিশ্বাস স্বয়ং । 

  তদন্তকারী অফিসার সাব-ইন্সপেক্টর দেবাশীষ সাধুখাঁর তত্ত্বাবধানে চলছে গোটা ঘটনার তদন্ত । রঞ্জিত রায় বাদে এফআইআর-এ উল্লিখিত বাকি সকলেই আপাতত ফেরার । অভিযুক্ত রঞ্জিত রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদের তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ, দিনকয়েকের মধ্যেই তাদের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে মনে করছে তদন্তকারী দল ।

Post a Comment

0 Comments